সিলেট, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ) : টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে আবারো সুনামগঞ্জের সুরমাসহ বিভিন্ন নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পয়েছে।
সোমবার দুপুরে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণ হওয়ায় সুরমা নদীর পানি বেড়েই চলছে, যার ফলে সুনামগঞ্জে ফের বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, বৌলাই, রক্তি নদীসহ জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অনেকস্থানে তীর উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় ক্লাস নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আবারও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা রয়েছে। এদিকে সড়ক প্লাবিত হওয়ায় ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার জেলা সদরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ জানা গেছে, তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কে তিনটি স্থানে ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে গত বন্যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক প্লাবিত হয়ে ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওইসব এলাকার লোকজন। এছাড়া হাওর ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষের ঘরে দুয়ারে পানি প্রবেশ করেছে। ভোগান্তি চরমে পড়েছে হাওরবাসী। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামছুদ্দোহা বাসস’কে জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আজ সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২৪ ঘন্টা ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, সিলেট জেলায়ও টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। সুরমার পানি কানাইঘাট পয়েন্টে সোমবার বিকেল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৫৫ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারার অমলশিদ পয়েন্টে ২৫, শেওলা পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে বীপদসীমর ৮০ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদ সীমার এক থেকে দেড় মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেটের কানাইঘাটে ৪৮ মিলিমিটার, সিলেট সদরে ১১৫ মিলিমিটার, শেওলায় ৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেট।